Search any words, questions and so on here.

মাস্টার্স বা পিএইচডি? - উচ্চতর শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু সাধাসিধে পরামর্শ

মাস্টার্স বা পিএইচডি? - উচ্চতর শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু সাধাসিধে পরামর্শ

স্নাতক তথা ব্যাচেলর্স ডিগ্রি লাভের পরে মাস্টার্স বা পিএইচডি পর্যায়ে পড়াশোনা করার জন্য যারা আগ্রহী, সেসব শিক্ষার্থীদের জন্য এই লেখাটা। 

বছর দশেক আগে উচ্চতর শিক্ষার্থে বিদেশে আসার পর থেকে আস্তে আস্তে ছাত্র, গবেষক, বিজ্ঞানী ও এখন শিক্ষক - নানা অবস্থা থেকে উচ্চতর শিক্ষার নানা দিক দেখার সুযোগ হয়েছে। এর ভিত্তিতে উচ্চতর শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু ছোট্ট টিপ্স দিতে চাই। প্রতিটি বিষয়েই বিস্তারিত লেখা আছে নানা জায়গায়, তাই সেসব পুনর্ব্যক্ত না করে অন্যান্য দিকে কথা বলবো।

- শুরু করতে হবে আগেই। ভারতের আইআইটি তো আছেই, এমনকি মোটামুটি মানের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ৩য় বর্ষ থেকে কাজ শুরু করে দেয়, যোগাযোগ করতে থাকে বিদেশের নানা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে। কাজেই বসে না থেকে একটু সচল হতে হবে।

- টোফেল বা জিআরই দিয়ে কি খুব খারাপ জিপিএ ঢেকে রাখা যায়? যায়, তবে একটা নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত। টোফেল দিয়ে কেবল আসলে দেখা হয় ছাত্রটি ইংরেজি পারে কি না। মোটামুটি গ্রহণযোগ্য নম্বর এর কম পেলে পত্রপাঠ বাদ (যদিনা GRE verbal এ ভালো স্কোর থাকে)। আর জিআরই এর গণিত ও ভার্বাল অংশের স্কোর দেখা হয়। বিশেষ করে পিএইচডি পর্যায়ে ৭৫০ এর কম কোয়ান্টিটেটিভ স্কোর প্রাপ্তদের সুযোগ কম। কারণ অভিজ্ঞতা থেকে আমরা দেখেছি, এর কম কোয়ান্টিটেটিভ স্কোর যারা পায়, তারা পরে বিশেষ সুবিধা করতে পারেনা অনেক ক্ষেত্রেই। 

- তবে হ্যাঁ, কম জিপিএ এর কুপ্রভাব এড়িয়ে ভর্তি কমিটিকে কনভিন্স করা অবশ্যই যায়, তার জন্য কিছুটা রিসার্চের অভিজ্ঞতা ভালো। অনেক কনফারেন্স আছে, স্থানীয় বা রিজিওনাল। সেগুলাতে পেপার থাকলে সেটা খুব কাজ দিবে। 

- স্টেইটমেন্ট অফ পারপাসে অনেকেই খুব জগাখিচুড়ি পাকিয়ে ফেলে। আমি কয়েকজনের স্টেইটমেন্ট পড়তে গিয়ে দেখেছি নানা সময়ে, কোনো ইউনিভার্সিটির সব প্রফেসরের নাম ধাম সেখানে এক এক করে লেখা - সবার রিসার্চেই আগ্রহ। এরকম বহু নৌকায় পা দেয়ারা যে আসলে ধান্ধা করছে, প্রফেসরেরা কিন্তু সেটা বুঝে ফেলে সহজেই। 

- আরেকটা ভুল হলো এক সাথে একাধিক প্রফেসরকে মেইল করে বলা আমি তোমার রিসার্চে আগ্রহী। প্রফেসরেরা কিন্তু কলিগ হিসাবে একে অন্যের সাথে কথা ঠিকই বলে। কাজেই যদি সবাইকেই বলো যে তার গবেষণায় আগ্রহী, আলোচনার সময়েই সেটা ধরা পড়বে, আর ফল হতে পারে খুব নেগেটিভ। 

- বিশাল বড় করে বাক্য লেখার অভ্যাস ছাড়ো। জিআরই পড়ার সময়ে শেখা বদখত দুর্বোধ্য শব্দগুলা উগরে দেয়ার অভ্যাস ছাড়ো। হ্যাঁ, আমরাও এক সময়ে জিআরই দিয়েছি, এক সময় এরকম শব্দ গিলেছি, কিন্তু বাস্তব জীবনে ওগুলার ব্যবহার নাই। ওতে কেউ ইম্প্রেস হবে না। বাংলায় কথা বলার সময়ে যদি কেউ বলে, "ভ্রাতঃ, এই বাটিতে কি কোনো প্রোষিতভর্তৃকা অবস্থান করেন?", তাহলে তার উপরে শ্রোতার মেজাজ খারাপ না হয়ে কি পারবে? আর বাংলাদেশের স্কুল কলেজের ইংরেজি পরীক্ষায় ১ প্যারাগ্রাফ লম্বা বাক্য লিখে অনেক নম্বর পেলেও অন্তত আমেরিকাতে লম্বা কথার চল নাই। কোনো বাক্য দুই লাইনের বেশি হলেই ইংরেজিভাষীরা খেই হারিয়ে ফেলে। 

- ইন্টার্নশিপ খুব কাজ দেয়। প্রচুর ইউনিভার্সিটিতে ইন্টার্নশিপ, সামার স্কুল, এসবের ব্যবস্থা আছে। ভারতের নানা জায়গা থেকে গাদায় গাদায় ছাত্র আমেরিকা, ইউরোপে এভাবে সামারে থেকে রিসার্চ করে যায়। এগুলা প্রচন্ড কাজ দিবে। আঠারো-মাসে-বছর চলে এমন ইউনিভার্সিটিতে পড়লে তোমার কপাল মন্দ, কিন্তু সেটা যদি না হয়, তাহলে সামারের সময়টাতে এই সুযোগগুলা কাজে অবশ্যই লাগিও। 


সবশেষে (আপাতত) বলি, দেশের টপ ইউনিভার্সিটিতে যদি ভর্তির সুযোগ নাও পেয়ে থাকো, ওটা নিয়ে চিন্তায় পড়ে থাকার কিছু না। বাংলাদেশের অধিকাংশ ইউনিভার্সিটিকে বিদেশে কেউ চিনে না। কাজেই অনেক জায়গাতেই আগের ইউনির নাম ভাঙিয়ে খাবার সুযোগ নাই, অন্যান্য নানা ফ্যাক্টর দিয়ে আন্ডারগ্রাড ইউনির ব্যাপারটা অবশ্যই এড়ানো চলে। 

দুনিয়াটা মস্ত বড়, আর অনেক সুযোগ সম্ভাবনা আছে সবার জন্যই। উদ্যমীদের তাই হয় জয়, চেষ্টা করলে আন্ডারগ্রাড যথা তথা, কর্ম হোক ভালো, এই মন্ত্রে সবখানেই যাওয়া চলে। 

ব্যস্ততার কারণে সবার জবাব আলাদা করে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। কয়েকটি প্রশ্নের জবাব এখানে দিতে চেষ্টা করবো। 

 

কিছু প্রশ্নের জবাব 

- সিজিপিএ কম মানে কতোটা কম?

এটা জায়গায় জায়গায় একেক রকম হয়। অধিকাংশ মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে দশমিকের পরে এক ঘর খালি জিপিএ ধরা ও বলা হয়। ফলে 3.41 আর 3.44 এর পার্থক্য একেবারেই নাই বললেই চলে। দুইটাই 3.4 হিসাবে দেখবে। 

৩ এর নিচে জিপিএ হলে সেটা একেবারেই কম। (তবে দুনিয়ার শেষ না, আমার এক বন্ধু মাঝারি cgpa নিয়ে পরে এক সময়ে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির সার্টিফিকেট পেয়েছে বুয়েটের CSE বিভাগের একমাত্র ছাত্র হিসাবে, মাস্টার্সে সে এক জায়গায় ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়েছিলো)। 

3.4 বা তার উপরে জিপিএ হলে ঠিক আছে। 

এর কম মানে 3.1-3.3 হলেও অন্তত মাস্টার্সে সুযোগ থাকে। পিএইচডিতে একটু কম, তবে অন্যান্য জিনিষ দিয়ে (পেপার, এক্সপিরিয়েন্স) সেটা কাভার করা যায়। 

 

লিখেছেনঃ ড. রাগিব হাসান

Dr. Ragib Hasan

Associate Professor,

Dept. of Computer and Information Sciences,

University of Alabama at Birmingham

He also leads the SECuRE and Trustworthy Computing Lab (SECRETLab).

And the founder of Shikkhok.com

আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা নিয়ে লেখকের আরো একটি চমৎকার লিখাঃ আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা ! ফান্ডিং না পেলে কীভাবে পড়বেন?

===========================================================================================

যারা জি,আর,ই ভারবাল নিয়ে চিন্তিত তারা ভিডিও গুলো দেখতে পারেনঃ জি ,আর, ই হাই ফ্রিকুয়েন্সি ওয়ার্ড

জি,আর,ই জিওমেট্রি পার্ট নিয়ে যারা চিন্তিতঃ জিওমেট্রি ইন ওয়ান প্লে লিস্ট

You would also like to know: I20 is the most important document that you will need for a student visa in the USA.

Related Posts


Recent Posts


Categories


Tags