Search any words, questions and so on here.

বাংলাদেশে ইংরেজি শেখার পদ্ধতিগত ভুল এবং উত্তরণের কৌশল

বাংলাদেশে ইংরেজি শেখার পদ্ধতিগত ভুল এবং উত্তরণের কৌশল

ছোট থেকে আমি আব্বার কাছে ম্যাথ শেখার দরুন ম্যাথে অনেক ভালো ছিলাম আর অন্য সবকিছুর বেস পরে সেটা থেকেই সৃষ্টি হয়েছে। ম্যাথে ঠিক যতটা ভালো ছিলাম ততখানিই খারাপ ছিলাম ইংরেজিতে। খারাপের কয়েকটা উদারহণ দিলে যাদের ইংরেজি নিয়ে ভয় বা নিজেদের ইংরেজির লেভেল অনেক দুর্বল মনে করে তাদের হয়ত একটু কনফিডেন্স বাড়বে। সেই উদাহরণ থেকে শুরু করে বর্তমান অবস্থান আর অভারকাম করার উপায় সাথে কেন ইংরেজি গুরুত্বপূর্ন তার একটা আইডিয়া এখানে দিব।

প্রথমেই আসি ইংরেজি শেখা কেন গুরুত্বপূর্ণ। এটা মনে হয় বেশি বিস্তারিত বর্নণা করা শুধুমাত্র বাহুল্যতাই হবে। সংক্ষেপে বলি, আপনি বিসিএস, জি আর ই, ব্যাংক বা অন্য যেকোনো চাকরির জন্যই চেষ্টা করেন্ না কেন ইংরেজি আপনাকে শেখা লাগবেই, আর এটা ছাড়া এসব প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষায় ভালো করা একেবারেই সম্ভব না। আর দেশের বাইরে পা রাখলে তো ইংরেজি ছাড়া আপনার অবস্থান কল্পনাই করতে পারবেন না। যাহোক এসব অতিব্যবহৃত কথা বার্তা বাদ দিয়ে আসল কথায় আসি।

প্রথমেই বলি আমি কত খারাপ ছিলাম। ক্লাস ফাইভের কোনো এক টার্মের পরীক্ষায় যখন অন্য সকল বিষয়ে ১০০ এর ভিতর আমার নাম্বার ছিল ৯০+ সেবার ইংরেজিতে পেয়েছিলাম মাত্র ৩৬! এর পর হাইস্কুলে উঠে ক্লাস নাইন পর্যন্ত ইংলিশে মার্ক পেতাম এভারেজ ৫০-৬০। ছোটথেকে আব্বার কাছে ম্যাথ পড়ার ফলে আর হাইস্কুলে মিয়াভাই (কাজিন) এর কাছে ম্যাথ পড়ার ফলে বাইরের কোনো টিচারের কাছে আমি কোনোদিন অ্যাডজাস্ট করতে পারিনি। এর মূল কারণ ছিল দুটি- আমার আব্বা আর মিয়াভাই দুজনেই ছিল প্রচন্ড স্মার্ট আর সিনিসিয়ার। এজন্য বাইরের কোনো টিচারের কাছে যদিও ইংরেজি শেখার চেষ্টা করছি ১-২ মাসের বেশি ভালোলাগেনি- প্রথমত বাপ-ভাইয়ের মত অত সিনসিয়ারলি কেউ পড়ায়না আর তার চেয়ে বড় কারণ হল পদ্ধতিগত ভূল।

প্রশ্ন হল সেই পদ্ধতিগত ভুল টা হল কি?

উত্তরটা আপনার নিজের জীবনের ভিতরেই লুকানো আছে। প্রথমত, ইংরেজি একটা ভাষা ছাড়া আর কিছুনা। এখন চিন্তা করে দেখেন আপনি আপনার মাতৃভাষা কিভাবে শিখেছেন। বাচ্চারা প্রথমে ভাষা শিখে শুনে। দেখবেন তারা কথা বলা সেখার আগে অন্যের কথা শুনে রেসপন্স করতে শিখে তার মানে তারা বুঝে এবং শব্দগুলোর সাথে পরিচিত হয়। তারপর বলা, ক্রমে ক্রমে বড় হয়ে পড়তে বা লিখতে শেখে আর স্কুলে না গেলে সেটা শেখেনা কিন্তু তার জন্য তাদের ভাষা শেখা কোনো অংশে কমতি থাকেনা। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হল আমরা যারা মাতৃভাষা শিখি তারা কোনোদিন গ্রামার শিখিনা। তারপরও দেখবেন আমরা যখন কথা বলি সেটা গ্রামার অনুযায়ী সঠিক নিয়মেই বলি, আবার আমি যখন এই লেখা লিখছি তখন গ্রামারের নিয়ম কানুন মুখস্থ না করেই লিখছি তারপরও দেখবেন এখানে হয়ত গ্রামারের বড় রকমের কোনো ভুল হয়ত পাবেননা। কিন্তু ছোটবেলা থেকে আমি যতবারই কারো কাছে ইংরেজি শিখতে গেছি আমারে ধরে ধরে আগেই গ্রামারের নিয়ম কানুন শেখায়। যেমন টেনস এর রুল (আমাদের সময় ১০টাকা দামের একটা বই পাওয়া যেত), প্রিপজিশন, আর্টিকেল, ট্রান্সলেশন, ইত্যাদি। আমার মতে এখানেই আমাদের পদ্ধতিগত সবচেয়ে বড় ভূল। আমরা ভাষা শেখার আগে শেখার চেষ্টা করি ভাষার নিয়ন কানুন। ছোটবেলার বাংলা ব্যাকরণে যেটা শিখেছি- “ভাষা ব্যাকরণকে শাসন করে কিন্তু ব্যাকরণ ভাষাকে শাসন করেনা” এই বেসিক জিনিসটায় আমরা ইংরেজি শেখার সময় ভূলে যায়। আমি বলছিনা যে ব্যাকরণ গুরত্বপূর্ণ না কিন্তু শেখার সময় আমাদের শেখার অর্ডার বা ক্রম টা মাথায় রাখতে হবে যে কোনটা আগে শিখতে হবে আর কোনটা পরে।

এবার একটা ছোট্ট ঘটনা বলি যে একটা ঘটনাই আমার ইংরেজি শেখার মোড় পরিবর্তন করে দিয়েছে। আগে যেমন বললাম, আমার ইংরেজির বেহাল দশার কথা, যথারীতি, ক্লাস নাইনে প্রথম সাময়িক পরীক্ষায় পেয়েছিলাম ৫৬ না ৫৭ এরকম একটা মার্ক। তখন আবার স্কুলে প্রতিদিন পড়া করে যেতে হত। তখন সিন আর আন-সিন ফিল ইন দ্যা ব্লাঙ্ক থাকতো। স্যার যে পড়া দিতেন দিনের পড়া দিনে মুখস্থ করে যেতাম বিশেষ টেকনিকে। দশটা করে গ্যাপ থাকতো যেগুলো সিন সেগুলোর জন্য উপরের টেবিলে যে ওয়ার্ড গুলো থাকতো তার একটা অর্ডার মুখস্থ করে যেতাম যেমন টেবিলে দুইটা করে রো থাকলে প্রথম গ্যাপে উপরের সারির তৃতীয় নং টা, হয়ত দ্বিতীয় গ্যাপে প্রথম সারির শেষের টা এভাবে মুখস্থ করতাম। বলাবাহুল্য পরেরদিন ই সেটা আবার ভুলে যেতাম কিন্তু লাভের লাভ যেটা হত ক্লাসে পড়া না পারার দরুন দাঁড়িয়ে থাকতে হতোনা বা মানটা বেঁচে যেত কোনোমতে। এমন সময় কোনো দিন উপজেলা থেকে আমাদের স্কুলে একজন অফিসার ভিজিট করতে আসছে এবং উনি আমাদের ইংরেজি ক্লাসের সময় ক্লাসে আসছেন। উনি পড়া ধরছেন আমাদের কাছে কিন্তু উনি কোন গ্যাপে কি হবে এটা না ধরে উনি ধরছেন যে প্যাসেজ এর ফিল ইন দ্যা ব্লাঙ্ক পূরণ করতে হবে ঐ প্যাসেজটা পড়ে আমাদের কে বাংলা মানে করতে বলেছেন। প্রথম সেন্টেন্স টা পড়ে উনি জিজ্ঞাসা করেছেন এই সেন্টেন্সের মানে কি। শুনে তো আমরা সবাই হা! এর পর আমরা কেউ না পারাতে উনি বলেন যে এই লাইনের প্রত্যেকটা ওয়ার্ড এর মানে কি এটা বল। সেক্ষেত্রে প্রথম যে ওয়ার্ড টা আসছে সেটা হল “Obstacle”। এখন আমরা তো কেউ আর মানে জানিনা আমাদের ক্লাস টিচার যিনি ছিলেন উনিও জানেননা! তখন উনি মানে টা বলে দিলেন আর বললেন তোমরা উত্তর মুখস্থ করার আগে যেটা পড়বা প্রত্যেকটা শব্দের মানে আগে পড়বা তারপর পুরো সেন্টেন্স এবং পুরো কনসেপ্ট টা বোঝার চেষ্টা করবা। এই কথাগুলোই আমার ইংরেজি শেখার মোড় পরিবর্তন করে দিয়েছিল আর আমি এখন যেখানে আছি তার বড় একটা অবদান ছিল ঐ দিনটার এবং ঐ কথাগুলোর। সেদিন থেকে কথাগুলো অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিলাম। আমার চ্যালেঞ্জ ছিল আমি যেখান থেকেই ইংলিশ পড়ি, ছেড়া খবরের কাগজের একটা পাতার একটা লাইন পড়লেও টার্গেট ছিল প্রতিটা ওয়ার্ড এর মানে জানা। ২৫ টাকা দামের একটা পকেট ডিকশনারি ছিল সেটা থেকে সব শব্দগুলো খুঁজে খুঁজে বের করতাম। এখন তো লাইফ অনেক ইজি। সবার হাতে হাতে স্মার্টফোন চাইলেই একটা ডিকশনারির অ্যাপ নামিয়ে নেওয়া যায়। গ্রামারটা আমি শিখেছি অটোমেটিক। যখন কিছু পড়তাম বা এখনো পড়ি আমি গভীরভাবে পর্যবেক্ষন করি সেন্টেন্স এর স্ট্রাকচারগুলো। কিভাবে লেখে, শব্দগুলো কিভাবে সাজায় এগুলো। এভাবে যখন অনেক কিছু পড়া হয়, দিনের পর দিন পড়া হয় তখন আপনি লেখার সময় গ্রামারটা অটোমেটিক কারেকশন হয়ে যাবে। আপনি চাইলেও আপনার কলম বা কিবোর্ড ভূল করবেনা।

ইংরেজি বলা শিখতে হলে আগে প্রচুর পরিমাণে শুনতে হবে সেটা হতে পারে ডেইলি নিউজ বা ইউটিউবে এরকম হাজার হাজার চ্যানেল আছে, আর লেখা শিখতে হলে আগে প্রচুর পরিমানে পড়ার অভ্যাস করতে হবে। কিন্তু, দুঃখজনক হল আমাদের পড়ালেখা টা হয়ে গেছে মুখস্থ নির্ভর, প্রাইভেট টিউটর আর রেজাল্ট কেন্দ্রিক। হাইস্কুলের ইংরেজি বইয়ের যে একটা টেক্সট বুক ছিল সেটা আমরা কোনোদিন খুলেও দেখিনি কারণ বছরের শুরুতে কোম্পানির লোক আসত তাদের বই নিয়ে যেখানে মডেল কোশ্চেন আর গ্রামারের সব নিয়ম-কানুন থাকতো আর সারাবছর ধরে আমাদের টিচাররাও সেগুলো পড়াতো আমাদের।

বিসিএস বা অন্য কোনো চাকরি বা জিআরই আই-ই-এল-টি-এস যেটাও জন্যই হোক যারা ইংরেজিতে ইম্প্রুভ করতে চান আমার প্রথম সাজেশন থাকতে ভোকাবুলারি ইম্প্রুভ করেন আর রিডিং হ্যাবিট এবং লিসেনিং হ্যাবিট গড়ে তোলেন।

ইংরেজিতে আমার বর্তমান অবস্থা নিয়ে কিছু বলবনা, এখনও শিখছি এবং ইম্প্রুভ করার অনেক জাইগা আছে কিন্তু আমি কিছু লিখতে সেটা গ্রান্ট হোক আর ম্যানুস্ক্রিপ্ট হোক আমার প্রফেসর যে কারেকশন দেন সেটা খুবই মিনিমাল যেটা একজন নেটিভ আমেরিকান স্টুডেন্ট দেরও দেন। কিন্তু আমাকে যদি এখন কেউ হাইস্কুল গ্রামারের ঐ বই খুলে গ্রামারের রুল জিজ্ঞেস করে বা দু-চারটা বাংলা সেন্টেন্স দিয়ে তার ইংরেজি ট্রান্সলেশন করতে বলে তাহলে আমি পুরাই ফ্লপ। ট্রান্সলেশনের ব্যাপারটা অন্য আরেকদিন সবিস্তারে বলব।

 

লিখেছেনঃ

Md Torikul Islam

মোঃ তরিকুল ইসলাম 

Graduate Research Assistant, The University of Utah

Former Graduate Research Assistant, University of Nebraska-Lincoln

Studied Masters in Biochemical and Molecular Nutrition, University of Nebraska-Lincoln

Studies Ph.D. in Nutrition and Integrative Physiology, The University of Utah

Studied Bachelor of Science, Institute of Nutrition & Food Science, University of Dhaka

===========================================================================================

যারা জি,আর,ই ভারবাল নিয়ে চিন্তিত তারা ভিডিও গুলো দেখতে পারেনঃ জি ,আর, ই হাই ফ্রিকুয়েন্সি ওয়ার্ড

জি,আর,ই জিওমেট্রি পার্ট নিয়ে যারা চিন্তিতঃ জিওমেট্রি ইন ওয়ান প্লে লিস্ট

You would also like to know: I20 is the most important document that you will need for a student visa in the USA.

Related Posts


Recent Posts


Categories


Tags