Search any words, questions and so on here.

মানতে চাই না আমি হার

মানতে চাই না আমি হার

লিখেছেনঃ

বশির মাহমুদ, পোর্টল্যান্ড,

ওরেগন

আমরা যারা প্রবাসে আসি তাদের সবার লক্ষ্য এবং গন্তব্য এক – উন্নত জীবন। একেকজন একেক ভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চেষ্টা করে। পড়াশুনা, ব্যবসা কিংবা চাকরী করে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য যে জীবন যুদ্ধের মধ্য দিয়ে তাদের যেতে হয় সেটা হয়তো অনেকের কাছে অজানা। যখনই আমি কোন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশী দেখি আমার প্রথম যে কথা মনে হয় সেটা হচ্ছে এর পেছনে অনেক অজানা গল্প আছে, অসম্ভব শ্রম এবং গভীর নিয়মানুবর্তীতা আছে, আছে অনন্য অদম্য ইচ্ছা। তাই যখন কেউ প্রবাসী বাংগালীকে দেশ ছেড়ে চলে আসার জন্য গালি দেয় আমার বেশ খারাপ লাগে। আমি নিজে একজন আমেরিকা প্রবাসী, তাই অনেক উত্থান পতনের সাক্ষী। আমি ছাত্র অবস্থায় এই দেশে এসেছি তাই চাক্ষুষ ছাত্রদের জীবন কাছে থেকে দেখেছি।  তাদেরকে নিয়ে আমার এই লেখা।

একজন ছাত্রকে আমেরিকা আসতে হলে বেশ কিছু কাজ করতে হয়। প্রথমে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে ইচ্ছুক সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটি কর্তৃক নির্বাচিত হতে হয়। প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী নির্বাচনের কিছু মানদন্ড থাকে। বাংলাদেশের স্কুল, কলেজ কিংবা ইউনিভার্সিটির পরীক্ষার ফলাফল, টোফেল, এসএটি, জিআরই, জিম্যাট পরীক্ষার ফলাফল বিবেচনা করে ভর্তি কমিটি ছাত্র-ছাত্রীর ভর্তির সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। তারমানে একজন ছাত্র-ছাত্রীকে আমেরিকায় পড়তে আসার আগে এই প্রয়োজনীয় পরীক্ষাগুলোতে ভালো করতে হয় যাতে সে ভর্তি হতে পারে। ছাত্র-ছাত্রীর ফলাফল এবং বিভিন্ন ধরণের মানদন্ডে সে কোন কোন ক্ষেত্রে স্কলারশীপ পেতে পারে আবার কোন কোন ক্ষেত্রে একেবারে পায় না। সেই ক্ষেত্রে প্রতি সেমিষ্টারের বেতনের টাকা তার নিজের দিতে হয়। যখন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়, তখন তাকে বিশ্ববিদ্যালয় আই-২০ ফর্ম পাঠায়। আই-২০ ফর্মটি হচ্ছে একাডেমিক অথবা ভাষা শিক্ষার জন্য একজন নন-ইমিগ্রান্টের এফ-১ ভিসা বা স্টুডেন্ট ভিসা স্ট্যাটাসের যোগ্যতা সার্টিফিকেট। সেই আই-২০ ফর্মটি নিয়ে সে আমেরিকার দূতাবাসে ভিসার জন্য দাঁড়ায়। শুধু এই আই-২০ থাকলেই হবে না, ভিসা ফি দিতে হবে, আমেরিকায় পড়তে আসার জন্য যথেষ্ট পরিমানে টাকা আছে কিনা সেটা প্রমান করতে হবে। অতটাকা কয়জনের ব্যাংকে থাকে। সবার তো বাবার ব্যাংকে কাড়ি কাড়ি টাকা নেই। তখন বিভিন্ন আত্নীয় স্বজন থেকে ধার করে কোনমতে একটা ব্যাংক একাউন্ট দাঁড় করাতে হয়। অথবা শুধু বাবা না, বড়লোক কোন আত্নীয়ও যে ছাত্রের স্পন্সর সেটা জমা দিতে হয়। আমি যখন ভিসার জন্য দাড়িয়েছিলাম সেটা ছিল ২০০০ সাল। তখন আমেরিকার দূতাবাসে ভিসার জন্য দাঁড়ানো জটিল কাজ ছিল। দূতাবাসে ঢোকার জন্য লম্বা লাইন পড়তো, একদিনে নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষের ইন্টারভিউ নেওয়া হত, তাই লাইনের শুরুতে না থাকলে সেদিন আর দূতাবাসে ঢুকতে পারা যেত না। সে লাইন দখল থাকতো দালালদের হাতে। তারা আপনার কাছ থেকে কিছু টাকা দিয়ে ওই লাইনের কোন এক জায়গা দখল করে রাখতো আপনার জন্য যাতে আপনি সেইদিনে দূতাবাসে ঢুকে ইন্টারভিউ দিতে পারেন। আর যদি দালালকে না টাকা দিতে চান, তাহলে আগের দিন সন্ধ্যার দিকে দূতাবাসে সামনে এসে লাইন দিয়ে দাঁড়াতে হবে। পরেরদিন সকাল আটটায় যখন এই লাইনকে দূতাবাসের ভেতরে ঢোকানো হবে তখন আপনি প্রথম দিকে থাকবেন। এখন পরিস্থিতি অনেক পরিবর্তন হয়েছে, দূতাবাসে এখন এপ্যায়ন্টম্যান্টের মাধ্যমে ভিসা সাক্ষাতকার করা হয়। যাই হোক সব বাধা পেরিয়ে যখন ভিসার সাক্ষাতকার দেওয়া হবে তখন হরেক রকম নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। সেই সময়ের আমেরিকার রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে ভিসা দেওয়া না দেওয়া নির্ভর করতো। আমি যখন ভিসার জন্য দাঁড়ালাম তখন আমেরিকার ছাত্র ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে গিয়েছিল। খুব সম্ভবত সরকারী পর্যায়ে ভিসা দেওয়া নিয়ে কড়াকড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আমি প্রথম সাক্ষাতকারে ফেল করলাম।। আমার সাথে ভিসা অফিসারে মাত্র দুই মিনিট কথা হয়েছিল। আমি রুমে ঢোকার পরে সে আমার কাগজপত্র নেড়েচেড়ে জিজ্ঞাসা করল,

তুমি কি বিবাহিত?

জ্বি না, জনাব।

তোমার কি বাচ্চা আছে?

আমি মনে মনে বললাম, এইটা কি ধরণের প্রশ্ন। মাত্র না বললাম আমি অবিবাহিত। পরে মনে হল, ওদের দেশে এই ঘটনা অস্বাভাবিক কিছু না। আমি উত্তর দিলাম,

জ্বি না জনাব।

তোমার কি বাংলাদেশে কোন বাড়ি আছে?

বাবার গ্রামে একটা বাড়ি আছে।

আমি তোমার কথা জিজ্ঞাসা করেছি? তোমার নিজের বাড়ী আছে?

মনে মনে ভাবছি, ব্যাটা বাড়ী থাকলে কি আর বিদেশ যাই। যাই তো বাড়ি যাতে বানাতে পারি সেই আশায়। আমি বললাম,

জ্বি না জনাব।

সে আমার পাসপোর্টে একটা সিল মেরে জানালো, যেহেতু আমার দেশে কিছু নেই, তারমানে একবার আমেরিকা গেলে আমি আর ফিরবো না। অতএব, আমাকে ভিসা দেওয়া হল না। তার চারমাস পরে আবার ভিসায় দাঁড়ালাম। এইবারে পেয়ে গেলাম। এই চারমাসে উপরোক্ত কোন প্রশ্নের উত্তরই তেমন একটা পরিবর্তন হয় নি, তাও কেন ভিসা পেলাম কে জানে। সেপ্টেম্বর ২০০১ এ টুইন টাওয়ার হামলার পরে ভিসা দেওয়া বোধকরি পুরাপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল কিছুদিনের জন্য। যাইহোক অনেক কষ্টে ভিসা পাওয়ার পরে এইবার শুরু হয় বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি। যদি স্কলারশীপ না পাওয়া যায় তাহলে, মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েদের জন্য এই পর্যায়ে বিদেশ যাওয়ার টাকা জোগাড় করতে বেশ বেগ পেতে হয়। বাবা মায়ের জমানো টাকা কিংবা আত্নীয় স্বজন থেকে ধার করে কোনক্রমে এক সেমিষ্টারের টাকা জোগাড় করে বিদেশ চলে আসে।

আমেরিকাতে পৌছার পরে শুরু হয় বিরাট যন্ত্রনা। পড়াশুনার চাপ তো আছে, সেই সাথে জীবিকা নির্বাহের চাপও আছে। কেউ যদি স্কলারশীপ নিয়ে আসে সেই এই যন্ত্রনায় কিছুটা কম পড়ে কিন্তু ওই স্কলারশীপের টাকা হালাল করার জন্য তাকেও কাজ করতে হয় অনেক। আর কেউ যদি স্কলারশীপ না নিয়ে আসে তাহলে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে কোন একটা কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করার চেষ্টা করে। এই প্রসংগে আমার ব্যক্তিগত এক অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। আমি অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা কাজ পেয়েছিলাম সেটা হচ্ছে বায়োলজী ডিপার্টম্যান্টের কিছু সাপ এবং অন্যান্য প্রানী ছিল একটা রুমে। আমার কাজ ছিল ওগুলো মল মূত্র পরিস্কার করা। কাজটা তেমন কিছু না, ওরা একটা কাঁচের বাক্সের মধ্যে বন্দী থাকে এবং নিচের একটা ট্রে তে মলমূত্র জমা হয়। সেই ট্রে বের করে পরিস্কার করে আবার রেখে দেওয়া। যাই হোক ওই কাজ একদিন করে ছেড়ে দিয়েছিলাম এবং অন্য আরেকটা কাজে যোগ দিয়েছিলাম। লেখাপড়া দেশীয় কায়দার চেয়ে যথেষ্ট ভিন্ন হওয়াতে পড়াশুনাতে হিমশিম খাওয়া একজন নতুন বিদেশী ছাত্রের জন্য অস্বাভাবিক কিছু না। তার উপর অনেক ছাত্র-ছাত্রীর জন্য নতুন এক অভিজ্ঞতা হয়। সেটা হচ্ছে দুই তিনজন রুমমেট নিয়ে তারা একটা বাসা ভাড়া করে থাকে এবং নিজের রান্না নিজের করে খেতে হয়। যারা জানেন না তাদের জানাচ্ছি আমেরিকায় বুয়া নাই, ঠিকা ঝি নেই। পানি খেতে চাইলে নিজে নিয়ে পানি খেতে হবে। নিজের বাথরুম নিজের ধুতে হবে। সবকিছু নিজের করতে হবে। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে নতুন ছাত্র-ছাত্রী রান্না শিখে নেয়। সাধারণত প্রথম দফায় সে রান্না অতি জঘন্য হয়, নিজে ছাড়া অন্য কেউ এই রান্না খেতে পারে না। তবে ধীরে ধীরে এই রান্না কিছুটা উন্নতি হয়। একজনের একটা গল্প জানি। সেই ছেলে আমেরিকায় এসেছে পড়াশুনা করতে, কিন্তু পড়াশুনার পাশাপাশি রান্না-বান্না, ঘর গোছানো ইত্যাদি ইত্যাদি যে করতে হবে সেটা সে জানে না। আসার পরে সে যাদের সাথে উঠেছে তারা রান্না করে এবং সে খায়। কয়েকদিন যাওয়ার পরে তাকে বলা হল, এভাবে তো চলবে না তোমাকেও রান্না করতে হবে। সে জানালো সে এখানে পড়তে এসেছে রান্না করতে আসে নি। তাকে বলা হল তোমাকে নিয়ম করে আমাদের মত করে ময়লা ফেলতে হবে। সে আবার জানালো সে পিএইচডি করতে এসেছে সে ময়লা ফেলতে আসে নি, অতএব সে পারবে না। তার রুমমেটরা তাকে বলল, আমরা কি বানের জলে ভেসে এসেছি, তোমার মত আমরাও পড়ালেখা করতে এসেছি। করলে কর নাহলে আমাদের এখান থেকে বিদায় হও।

বলাবাহুল্য যারা আন্ডারগ্রেডে পড়তে এসেছে তাদের বেশীর ভাগেরই নিজের টিউশন ফি নিজের দিতে হয়। গ্র্যাজুয়েট ছাত্রদের কিছু স্কলারশীপের ব্যবস্থা প্রফেসর বা ডিপার্টম্যান্টে থাকে। উভয়ের ক্ষেত্রেই একটা ঝামেলা দেখা দেয়। সেটা হচ্ছে আগামী সেমিষ্টারের টিউশন ফি জোগাড়ের ব্যবস্থা করা। আন্ডারগ্রেডের বেশীর ভাগ ছাত্র-ছাত্রীর বাবা-মায়ের যথেষ্ট পরিমানে টাকা না থাকলে শেষ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। আর গ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে যারা স্কলারশীপ নিয়ে এসেছে তাদের যে আগামী সেমিষ্টারে টিউশনী ফি মওকুফ হবে এমন কোন নিশ্চয়তা থাকে না কিছু কিছু ক্ষেত্রে। আর যারা নিজের টাকায় এসেছে তারা প্রফেসরদের দরজায় দরজায় ঘুরতে থাকে কোন একটা স্কলারশীপের আশায়। স্টুডেন্ট ভিসায় আসার কারণে এরা শুধুমাত্র ইউনিভার্সিটিতে কাজ করতে পারে, বাহিরে অন্য কোথাও কাজ করার অনুমতি ওদের নেই। এই সময় টাকা জোগাড় করার জন্য এরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ নেয়। গ্যাস স্টেশন, বিভিন্ন স্টোর এবং অন্যান্য জায়গায় ওরা বেআইনী ভাবে কাজ নেয় আগামী সেমিষ্টারের টিউশন ফি জমানোর জন্যেযেসব লোক এদেরকে কাজ দেয় তারা নগদ টাকায় এদের বেতন দেয় এবং অবশ্যই যোগ্য বেতনের অর্ধেকের কম বেতন দেওয়া হয়আমার কিছু বন্ধু-বান্ধব রাতের বেলায় “গ্রেভ ইয়ার্ড” শিফটে কাজ করতো গ্যাস স্টেশনে। গ্রেভ ইয়ার্ড (কবরস্থান) শিফট হচ্ছে রাতে একা একা গ্যাস স্টেশনে কাজ করা। চারদিক শুনশান নীরবতা, মাঝে মাঝে সামনে দিয়ে গাড়ি চলে যায় আর পুরো দোকানে যে কাজ করছে সে একা। এই কবরের স্থানের নিরবতার মাঝে হরেক রকমের মানুষ এসে থেমে এটা ওটা কিনে। এদের অনেকে দেখতে ভয়াবহ তাই ডাকাতির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে সকাল বেলায় আবার ইউনিভার্সিটির ক্লাস আছে। রাতে কাজ করে সকাল বেলায় ক্লাস করে আবার স্কুলের নিয়মিত কাজ (অন ক্যাম্পাস জব) করার পরে শক্তি তেমন একটা বাকি থাকে না। কিন্তু এখানেই শেষ না, ক্লাসের প্রজক্টের জন্য কাজ করতে হয়, হোমওয়ার্ক করতে হয়। এভাবে গড়াতে গড়াতে পড়াশুনা শেষ করার শেষ প্রান্তে এসে শুরু হয় চাকরী খোঁজার পালা। সে এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। যাদের ভাগ্য ভালো তারা ভালোয় ভালোয় চাকরী পেয়ে যায়।  কিন্তু যখন চাকরীর বাজার থাকে মন্দা তখন চাকরী পাওয়া ভীষন কঠিন। আরেকটা জিনিস হচ্ছে, চাকরী পেলে শুধু হবে না চাকরী ভিসাও (এইচ-ওয়ান) দরকার যাতে লম্বা সময়ের জন্য চাকরী করতে পারে। আমি মাস্টার্স পাশ করার পরে হন্যে হয়ে চাকরী খুঁজছিলাম। অনেক খোঁজার পরে একটা ছোট কোম্পানীতে চাকরী পেলাম। কিছুদিন কাজ করার পরে একদিন সকালে অফিসে এসে দেখি আমার টেবিলে একটা নিউজপেপার রাখা। আমি পেপারটি সরিয়ে রেখে দিনের কাজ শুরু করলাম। কিছুক্ষন পরে অফিসের বস এসে আমাকে বলল,

তুমি কি খবরটি পড়েছ?

আমি বললাম, কি খবর?

এই বছরের এইচ-ওয়ান ভিসার কোটা শেষ হয়ে গিয়েছে।

আমি পেপারটা হাতে নিয়ে খবরটা পড়লাম। ওই বছর এইচ-ওয়ান ভিসার কোটা কমিয়ে তিন ভাগের এক ভাগে নামিয়ে আসা হয়েছিল এবং অল্প কয়েকদিনের মধ্যে ওই ভিসা শেষ হয়ে গেছে। সাধারণত লেখাপড়া শেষ করার পরে এক বছরের জন্য নন-ইমিগ্রান্ট ছাত্রদের কাজের অনুমতি দেওয়া হয়। আমি সেই অনুমতি নিয়ে কাজ করছিলাম সেই এক বছর শেষ হয়ে গেলে এইচ-ওয়ান ভিসা দিয়ে আমার কাজ করতে হত। এখন এই ভিসার কোটা শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে কোম্পানীর পক্ষে আমাকে আর রাখা সম্ভব হবে না।

আমাকে বস বলল, তোমার চাকরী আজকে থেকে শেষ। তুমি তাহলে তোমার জিনিসিপত্র গুছিয়ে বাড়ি চলে যাও।

প্রচন্ড ব্যথিত হয়ে আমি অফিসে থেকে বের হয়ে আসলামমাস্টার্স শেষে এক বছরের কাজ করার অনুমতির তখনো প্রায় ছয় মাস বাকী। এই বছরের এইচ-ওয়ান কোটা শেষ হওয়ার কারণে আর কেউ চাকরীতে নিবে না। এখন ভরসা হচ্ছে পিএইচডিতে ভর্তি হওয়া। না হলে ছয়মাস পরে আমেরিকা ছেড়ে চলে যেতে হবে। মাটি কামড়ে পিএইচডি শুরু করলাম কয়েকমাস পরে। তবে পিএইচডি শুরু করার আগে এই ছয়মাস অনেক জায়গায় বিভিন্ন রকম কাজ করেছি। সেই গল্প এখন আপাতত করতে চাচ্ছি না। মাটি কামড়ে পিএইচডি শেষ করে যখন চাকরী পেলাম মনে হল আমার কষ্টের জীবন যেন শেষ হল। আমার ব্যক্তিগত এই গল্পের মত হাজার বিদেশী ছাত্রের জীবনের সফলতার গল্পের পেছনে লুকিয়ে আছে অজস্র গল্প – কষ্টের, পরিশ্রমের আর বিসর্জনের। কারো কারো গল্প আমি চাক্ষুষ দেখেছি আর কেউ সেই গল্প নিজের মধ্যে লুকিয়ে রেখেছে। কিন্তু সবার মধ্যে একটা ব্যাপার খুব মিল ছিল, আর সেটা হচ্ছে হার না মানার অদম্য ইচ্ছা। যতদিন এই জিনিস কোন মানুষের মধ্যে থাকবে ততদিন সে শত ব্যর্থতার মাঝেও সফলতাকে ঠিকই বের করে আনবে।

যারা জি,আর,ই ভারবাল নিয়ে চিন্তিত তারা ভিডিও গুলো দেখতে পারেনঃ জি ,আর, ই হাই ফ্রিকুয়েন্সি ওয়ার্ড

You would also like to know: I20 is the most important document that you will need for a student visa in the USA.

Related Posts


Recent Posts


Categories


Tags