Search any words, questions and so on here.

আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা - গ্রাজুয়েট স্কুলে সফল হতে হলে কী করবেন

আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা - গ্রাজুয়েট স্কুলে সফল হতে হলে কী করবেন

লিখেছেনঃ ড. রাগিব হাসান

Dr. Ragib Hasan

Associate Professor,

Dept. of Computer and Information Sciences,

University of Alabama at Birmingham

He also leads the SECuRE and Trustworthy Computing Lab (SECRETLab).

And the founder of Shikkhok.com

উচ্চশিক্ষা নিয়ে অনেক কিছু নানা সময়ে লিখেছি, যার অধিকাংশই আসলে ভর্তি ও ফান্ডিং নিয়ে। এবার ভাবছি যারা মাস্টার্স বা পিএইচডি করতে এসেছেন, তাদের জন্য কিছু পরামর্শ নিয়ে লিখবো। লেখাটা আমার নিজের ছাত্র ও শিক্ষক হিসাবে অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা বলে অনেকটা আমেরিকা কেন্দ্রিক তবে মূল ব্যাপারগুলো সব দেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

~ পড়ালেখার নতুন ধরণ ~

মাস্টার্সে তো অবশ্যই, পিএইচডি প্রোগ্রামেও শুরুতে করতে হবে অনেক কোর্সওয়ার্ক। আপনি এখানে আসার আগে বহু কোর্স করে এসেছেন স্নাতক পর্যায়ে, তাই ভাবতে পারেন এ আর এমন কি। আসলেই তেমন আলাদা কিছু না, তবে কিছু কিছু জিনিষ একেবারেই আলাদা।

- মুখস্ত করে পার পাবেন না -- গ্রাজুয়েট পর্যায়ে অধিকাংশ কোর্সে মুখস্তবিদ্যার স্থান নাই। বরং চিন্তা করে সমস্যা সমাধান করার উপরে গুরুত্ব দেয়া হয়। যদি আপনার আগের অভ্যাস হয় বই নিয়ে অমুক জিনিষের সংজ্ঞা অক্ষরে অক্ষরে মুখস্ত ঠোঁটস্থ করে ফেলা আর পরীক্ষার খাতায় উগরে দেয়া, তাহলে অভ্যাসটা পাল্টাতে হবে। আর আগের মতো পুরা সেমিস্টার গায়ে বাতাস লাগিয়ে পরীক্ষার আগের রাতে পড়ে ফাটিয়ে ফেলবেন, সেটাতেও কাজ হবে না, কারণ ফাইনাল পরীক্ষার ওজনটা কম, পুরো সেমিস্টার জুড়ে এসাইনমেন্ট আর প্রজেক্ট কিংবা মিডটার্মের গুরুত্ব অনেকটা একই সমান। তাই নিয়মিতভাবে শুরু থেকেই পড়ার অভ্যাসটা গড়তে হবে।

- ঘাপটি মারার অবসান -- আমার পূর্ব অভিজ্ঞতা অনুসারে বাংলাদেশে ক্লাস চলার সময়ে শিক্ষককে প্রশ্ন করাটাকে খুব নেতিবাচক হিসাবে দেখা হয় -- প্রশ্ন কর্তা আঁতেল কিংবা বেয়াদব দুই রকমেরই খেতাব পেতে পারে। গ্রাজুয়েট স্কুলে বরং প্রশ্ন করাটাই মনোযোগী শিক্ষার্থীর লক্ষণ -- অনেক ক্লাসে রীতিমত ৫-১০% নম্বর থাকে ক্লাস পার্টিসিপেশনের উপরে। কাজেই না বুঝলে বা প্রশ্ন আসলে ঘাপটি মেরে না থেকে প্রশ্ন করুন।

~ বৃত্তের বাইরে বেরুনো ~

বিদেশে পড়তে আসা বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা অনেক ক্ষেত্রেই দেখেন, কোথায় বাংলাদেশী ছাত্র বেশী আছে। যেখানে আছে সেখানে নিজের দেশী লোকজনের সাথে আরামে আড্ডা দেয়া যাবে সেটাই লক্ষ্য। কিন্তু সব সময় যদি দেশী লোকজনের সাথেই লেগে থাকেন, তাহলে আপনি কূপমণ্ডুকই হয়ে থাকবেন -- পরিচিতি ও নেটওয়ার্কিং কোনটাই হবে না। তাই ক্লাসে প্রজেক্টের গ্রুপ করা কিংবা একসাথে বসা -- সব ক্ষেত্রেই চেষ্টা করুন কেবল দেশী লোকজনের সাথে দল না পাকিয়ে বিদেশীদের সাথেও মিশতে।

একই কথা প্রযোজ্য আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসে থাকা কিংবা অন্যান্য স্টাফদের ক্ষেত্রে -- মনে রাখবেন, ডিপার্টমেন্টের অনেক কিছুই কিন্তু চালায় আসলে স্টাফেরা। কাজেই ডিপার্টমেন্ট সেক্রেটারি বা এরকম অন্যদের সাথে নিয়মিত কথা বলুন, পরিচিত হন।

সপ্তাহান্তে কী করবেন? আবারও দেশী লোকজন সহ আড্ডা ও খাওয়াদাওয়া দাওয়াতের বৃত্ত? সেগুলা করবেন বটে, কিন্তু তার সাথে সাথে স্থানীয় সংস্কৃতি, অনুষ্ঠান, উৎসব এগুলোর সাথে পরিচিত হন। থাংকসিগিভিং ডিনারের দাওয়াত নিয়ে আসবে নানা স্থানীয় সংস্থা -- নানা চার্চ থেকে ডাকাডাকি করবে তাদের ডিনারে যেতে, "ধর্ম যার যার উৎসব সবার" এই কথাটা অন্তত এইবার মনে রেখে এসব অনুষ্ঠানে যান। স্থানীয় লোকজনের সাথে পরিচিত হন। আর আপনার ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকেও শিক্ষার্থীদের জন্য নানা রকমের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে, সেগুলোর খোঁজ নিয়ে নিয়মিতভাবে যান সেগুলোতে। অন্যান্য আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সাথে মিশুন ভালো করে, ওরাও আপনার মতোই দেশ ও প্রিয়জন ছেড়েই এসেছে। ইউনিভারসিটির খেলাধুলার নানা ম্যাচের টিকেট শিক্ষার্থীরা সস্তায় পায়, সেটা দেখে নিন। কেবল ক্রিকেটে না মজে থেকে আমেরিকান ফুটবলটাও একটু বুঝে নিন, অন্তত অন্যদের সাথে কথা বলার জন্যও খেলাধুলার খবর রাখা ভালো।

কেনো বলছি এতো সবার সাথে মেশার জন্য? কারণ এই যোগাযোগ ও বন্ধুত্বগুলো আপনার কেবল পড়ার সময়ে না, বরং ক্যারিয়ারের সময়েও আগামী বহু বছর কাজে আসবে।

~ মন ভালো রাখা ~

দেশ থেকে মাত্র এসেছেন, এই সময়টাতে আপনার মনের অবস্থা কেমন? এই ব্যাপারে গবেষণা করেছেন এমন একজনের তত্ত্ব হলো এই সময়ে শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থাটা হয় অনেকটা বাথটাব কার্ভের মতো। শুরুতে নতুন সবকিছু দেখে মনটা খুব উৎফুল্ল থাকে, নিত্যনতুন জিনিষ দেখে ও করে ভালো লাগে খুব। তার পরে? কিছুদিন পরে ধপ করে মনটা খারাপ লাগে, প্রিয়জনদের ফেলে আসার কারণে মানসিক অবস্থা খারাপ হয়ে যায়, মনে হয় সবকিছু ফেলে চলে যান দেশে। এই অবস্থায় কিছু দিন যাবার পরে মনটা আস্তে আস্তে ভালো হয়, নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারেন নিজেকে।

এই বাথটাব কার্ভ ফলো করাটাই গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখবেন, হোমসিক হওয়াটা স্বাভাবিক, তবে নতুন পরিবেশে নতুন মানুষদের সাথে আস্তে আস্তে আপনি খাপ খাইয়ে নিতে পারবেন অচিরেই। আর এখনকার যুগে ফেইসবুক, স্কাইপ কিংবা অন্যান্য ভিডিও চ্যাটের কল্যাণে প্রিয়জনের সাথে প্রতিদিন চাইলেই দেখা হচ্ছে ভার্চুয়াল জগতে, কাজেই একদা শিক্ষার্থীরা যেভাবে বিশাল একটা ধাক্কা খেতো বা একাকী হয়ে যেতো, সেই দিন আর নাই। কাজেই মনটা ভালো রাখেন, ভাবেন যে জীবনে ক্যারিয়ারে আগানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ করতেই আপনি এসেছেন। সেজন্য একটু ত্যাগ স্বীকার করতে হবেই।

~ রান্না ও গবেষণা ~

গ্রাজুয়েট স্টুডেন্টদেরকে রান্নার উপরে ভালো কিছু পরামর্শ দেয়ার ইচ্ছা আমার অনেক দিনেরই। এর কারণ হলো নানা রান্নার বই কিংবা ভিডিও হয়েতো বগলদাবা করে নিয়ে এসেছেন দেশ থেকে, কিন্তু সেইগুলা আসলে অনেক সময় নিয়ে দীর্ঘ পরিশ্রমে করা রান্নার বই। আপনার এতো সময় থাকবে না। তাই শর্টকাটে রান্না করা শিখতে হবে। অভিজ্ঞতা অনুসারে বলতে পারি, আমাদের দেশী রান্নার চাইতে অন্য অনেক রকমের রান্না স্বাস্থ্যকর এবং রাঁধতে কম সময় লাগে এমন হয়। যেমন থাই রান্না, অথবা বেকিং করে মাছ রান্না অনেক দ্রুত করা সম্ভব, কম কষ্টে। সেটা শিখে নিতে হবে, দরকার হলে ইউটিউবের শরণাপন্ন হন।

----

ভালো থাকুন সবাই, সফল হন আপনাদের জ্ঞান সাধনায়।

#এলোচিন্তা #আমেরিকায়উচ্চশিক্ষা #উচ্চশিক্ষা

#আমেরিকায়উচ্চশিক্ষা #যুক্তরাষ্ট্রেউচ্চশিক্ষা

 

আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা নিয়ে লেখকের আরো একটি চমৎকার লিখাঃ আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা ! ফান্ডিং না পেলে কীভাবে পড়বেন?

===========================================================================================

যারা জি,আর,ই ভারবাল নিয়ে চিন্তিত তারা ভিডিও গুলো দেখতে পারেনঃ জি ,আর, ই হাই ফ্রিকুয়েন্সি ওয়ার্ড

জি,আর,ই জিওমেট্রি পার্ট নিয়ে যারা চিন্তিতঃ জিওমেট্রি ইন ওয়ান প্লে লিস্ট

You would also like to know: I20 is the most important document that you will need for a student visa in the USA.

Related Posts


Recent Posts


Categories


Tags